শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসছে দেশে
মির্জা ফখরুল: পরিকল্পিতভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। আন্দোলনকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করার অপচেষ্টা চলছে। এমন কিছু ঘটনা ঘটছে, যা ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে ‘রাষ্ট্র পুনর্গঠনে লেখক-শিল্পীদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ভয়াবহ পরিস্থিতির শঙ্কা
মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘদিনের সংগ্রাম এবং ত্যাগের মধ্য দিয়ে যে আন্দোলন চলছে, তা ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে পতিত ফ্যাসিবাদ এ অবস্থা তৈরি করছে। যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, তাদের মধ্যেই বিভাজন তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বিভ্রান্তিকর কথা শোনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের অভাব
মির্জা ফখরুল বলেন, ৫৩ বছরে দেশ একবারও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেনি। সবসময় রক্তপাত, লড়াই, এবং সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটেছে। ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার শঙ্কা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা এমন কিছু করছি, যার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।’
ইসকন প্রসঙ্গে প্রশ্ন
ভারতের গণমাধ্যমের প্রশ্ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের প্রশ্ন ইসকনের বিষয়ে আমরা কী করছি। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, যা ইতোমধ্যেই ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের উচিত বিভাজন তৈরি না করা।’
তরুণদের উদ্দেশে বার্তা
তরুণদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘জাতির স্বার্থে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এমন কোনো হঠকারী কাজ করা যাবে না, যা আমাদের আবার অন্ধকারে নিয়ে যাবে।’
নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি উপযুক্ত রাষ্ট্র গঠনের জন্য নির্বাচন অপরিহার্য। যদিও নির্বাচন এককভাবে গণতন্ত্র নয়, তবে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে যেতে হবে।
লেখক-শিল্পীদের ভূমিকা
ফখরুল বলেন, জাতি গঠনে কবি-লেখকদের সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তবে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে সেই ভূমিকা অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছিল। ভয় এবং আতঙ্কের কারণে কেউ কথা বলতে বা লিখতে সাহস করেননি। এখন লেখক ও শিল্পীদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে।
সভায় অন্যান্য বক্তাদের বক্তব্য
সভায় বক্তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলের কর্মকাণ্ডে দেশে অশনিসংকেত দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কবি-সাহিত্যিক-রাজনীতিকদের এক হতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রায়হান। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, লেখক ও সাংবাদিক আবু সাঈদ খানসহ অনেকে।